ই-কমার্স এর পূর্ণরূপ ইলেকট্রনিক কমার্স। এটি একটি আধুনিক ব্যবসা পদ্ধতি। ই-কমার্সের প্রকারভেদ:
- ব্যবসা থেকে ভোক্তা
- ব্যবসা থেকে ব্যবসা
- ভোক্তা থেকে বক্তা
- ভোক্তা থেকে ব্যবসা
ই-কমার্স এবং ই বিজনেজ এর মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাণিজ্যিক লেনদেন করাকেই কমার্স বলে। অন্যদিকে ই-বিজনেস বলতে বোঝায়, যেকোন প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণাধীন আদুনিক ইনফর্মেশন সিস্টেমসহ ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার লেনদেন এবং প্রসেসকে। কিছু ই-কমার্স সাইট নিম্নরূপ:
- অ্যামাজন ডট কম (Amazon.com): বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স সাইট অ্যামাজন। এটির প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ৫ জুলাই ১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সিয়াটলে অবস্থিত।
- ওএলএক্স ডট কম (Olx.com): ২০০৬ সালে ফেব্রিস গ্রিন্ডা এটি প্রতিষ্ঠা করেন। অনলাইনে কেনাবেচার একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এটি।
- বিক্রয় ডট কম (Bikroy.com): বাংলাদেশ অনলাইনে কোনাবেচার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম এটি। ২০১২ সালের ১ জুন ওয়েবসাইটটি যাত্রা শুরু করে।
- এখানেই ডট কম (Ekhanei.com): এটি বাংলাদেশের প্রচলিত একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক ই-কমার্স সাইট। ২০০৬ গ্রামীনফোনের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এটি নরওয়ে ভিত্তিক শিবস্টেড এবং টিলিনর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান।
মোবাইল ব্যাংকিং:
বর্তমানে একজন গ্রাহক মোবাইল ব্যবহার করে আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করতে পারে। এ মাধ্যমে খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠানো যায়। ২০১০ সালে ডাচ বাংলা ব্যাংক, বাংলাদেশে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবান নাম ‘রকেট’। বর্তমানে বিকাশ, নগদ ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে।
অনলাইন ব্যাংকিং:
ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমকে অনলাইন ব্যাংকিং বলে। অনলাইন ব্যাংকিংয়ে একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস থাকে যা অ্যাপ্লিকেশন সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকে। এখানে সব লেনদেন রিয়েল-টাইমে সংঘটিত হয় বিধায় ব্যাংকের শাখা বলে কোন ধারণা থাকবে না। দিন রাত ২৪ ঘন্টা এবং বছরের ৩৬৫ দিন যেকোন স্থান থেকে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের সুবিধা, হিসাবে ব্যালেন্স অনুসন্ধান, এক হিসাব থেকে অন্য হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা যায়। ইন্টারনেট ব্যাংকিং স্বয়ংক্রিয় ভাবে সফটওয়ারের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয় বলে এটি খুব দ্রুত এবং সুবিধাজনক।
দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও প্রযুক্তি:
ইন্টারনেট:
কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদানের প্রযুক্তিকে ইন্টারনেট বলা হয়। ইন্টারনেটের শব্দগত বিশ্লেষণ করলে তাকে International Network এর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে পাওয়া যায়। ১৯৯০ সালে ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার শরু হলেও মূলতঃ ১৯৬৯ সালে ARPANET (Advance Research Projects Agency Network) নামে ইন্টারনেটের প্রাথমিক কার্ডক্রম শরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর সেটি চালু করে। ১৯৯৪ সালে ইন্টারনেট শব্দটি ব্যবহৃত হয় এবং তা ব্যাপকভাবে পরিচিত হতে থাকে। আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী ভিন্টন গ্রে সার্ফকে ‘ইন্টারনেটের জনক’ বলা হয়। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারে শীর্ষ তিনটি দেশ যথাক্রমে- চীন, ভারত এবং যুক্তরষ্ট্র। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয়।
ইন্টারনেট সংক্রান্ত কতিপয় তথ্য:
- কম্পিউটারকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করে মডেম প্রয়োজন। মডেমে একটি মডুলেটর এবং একটি ডিমডুলেটর থাকে।
- একটি প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত ওয়েবসাইট যা কেবল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাই ব্যবহার করতে পারবেন তাকে ইন্ট্রানেট বলে।
- একটি প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রানেটকে যখন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করা হয় তখন তাকে বলে এক্সট্রানেট।
- যেসব কোম্পানী ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে তাদেরকে ISP বলে।
- সাধারণত সেবা প্রদানকারী সংস্থার নিজস্ব ASAT এবং সার্ভাার থাকে। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য নূন্যতম ৮০৩০৬ প্রসেসরযুক্ত কোন কম্পিউটার, ৪ মেগাবাইট এবং অপারেটিং সিস্টেমসহ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়।
- TCP/ IP প্রটোকলটি ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। র্
- ARPANET এ ১৯৮৩ সালে প্রথম TCP/ IP প্রটোকল ব্যবহার শুরু হয়।
- IP Address এর পূর্ণরূপ- Internet Protocol Address.
- IP Address প্রতিটি কম্পিউটার এর Identity Number নির্দেশ করে।
- বর্তমানে ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪ বা IPv4 চালু আছে।
- আইপি অ্যাড্রেস এর প্রথম দুটি অক্টেট নেটওয়ার্ক আইডি এবং পরের দুটি অক্টেট হোস্ট আইট প্রকাশ করে।
- DHCP এর পূর্ণ নাম হল- Dynamic Host Configuration Protocol.
- একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের সাথে নেটওয়ার্ক কানেকশনের জন্য যে আইপ অ্যাড্রেস প্রয়োজন DHCP স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সে আইপি এড্রেস দেয়।
- HTML এর পূর্ণরূপ- Hyper Text Markup Language.
- http এর পূর্ণরূপ- Hypertext Transfer Protocol.
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব:
www- এর পূর্ণরূপ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (world wide web)। একে সংক্ষেপে ওয়েবপেজ বা ওয়েব বলা হয়। ১৯৮৯ সালে সুইজারল্যান্ডের CERN এর বিজ্ঞানী টিম বার্নার্স লি (Tim Berners Lee) www উদ্ভাবন করেন। কোন ওয়েবসাইটে প্রথমে ঢুকলে যে পেজটি পদর্শিত হয় সেটিকে হোমপেজ বলে। একটি ওয়েব পেজ লোড করার জন্য ওয়েব ব্রাউজিং এ Refresh বোতাম চাপা হয়। সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্যে ওয়েবপেজের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো খুঁজে বের করা হয়। কতগুলো সার্চ ইঞ্জিন হল- Yahoo, Google, Bing, AOL, MSN, Pipilika, Ask, Altavista ইত্যাদি। বাংলাদেশে তৈরি সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা (Pipilika) এবং চরকি (Chorki)।
নিত্য প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং প্রযুক্তি:
ই-মেইল:
Electronic mail- এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল ইমেইল। ১৯৭২ সালে প্রথম @-চিহ্নকে ইমেইল ঠিকানায় প্রথম ব্যবহার করা হয়। ইমেইল ঠিকানা লিখতে হলে অবশ্যই @ চিহ্ন লিখতে হয়। ইমেইল ঠিকানা দুটি অংশে বিভক্ত। @ চিহ্নের আগের অংশ User Name বা ব্যবহারকারীর ঠিকানা থাকে এবং @ চিহ্নের পরের অংশটি হলে Domain Name। ইমেইল করার সময় যে Message লিখে পাঠানো হয় তাকে Text Message বলে। ইমেইল করে কোন ফাইল সংযুক্ত করে পাঠানো হলে তাকে Attachment বলে। ইমেইলে নির্দেশিত CC gcv পূর্নরূপ- Carbon Copy এবং BCC এর পূর্ণরূপ- Blind Carbon Copy। ভুয়া এবং অযাচিত ইমেইলকে Spam বলা হয়। কতিপয় ইমেইল সার্ভিস প্র্রোভাইডারের নাম- Gmail, Zoho mail, outlook.com, yahoo mail, GMX, AOLmail ইত্যাদি।
ফ্যাক্স:
Fax শব্দটি ইংরেজি facsimile শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। কোন লিখিত বক্তব্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছানোর জন্য ফ্যাক্স ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যবহার করতে টেলিফোন লাইনের সংযোগ দরকার হয়।
টেলেক্স:
এটি এক ধরনের টেলিপ্রিন্টার এবং এতে পাইপরাইটার যুক্ত থাকে। টেলেক্সের মাধ্যমে কথা বা শব্দ প্রেরণ করা হয়।
ATM মেশিন:
ATM কথাটির পূর্ণরূপ হল- Automated Teller Machine। ATM মেশিনের আবিষ্কারক জন শেফার্জ ব্যারন। এটি মূলত একটি ইলেকট্রনিক মেশিন যার সাহায্যে খুব সহজে কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন করা যায়। গ্রাহকের ব্যবহৃত কার্ডে একটি চার সংখ্যার PIN নাম্বার থাকে। গোপনীয় এই নাম্বার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়।