দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতির কি?

দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতি হচ্ছে হিসাবরক্ষণের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ, বিজ্ঞানসম্মত ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।

১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় ধর্মযাজক ও গণিতশাস্ত্রবিদ লুক প্যাসিওলি (Luca Pacioli) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Summa de Arithmetica Geometria Proporition et Proporitionalita তে দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাবরক্ষণের কলা কৌশল লিপিবদ্ধ করেন।

দু’তরফা দাখিলা পদ্ধিতরি বৈশিষ্ট্য বা মূলনীতি:

  • দুটি পক্ষ
  • ডেবিট ও ক্রেডিট
  • সমপরিমাণ অংকের আদান-প্রদান
  • পৃথক সত্তা
  • ফলাফল

দু’তরফা দাখিলা পদ্ধতির সুবিধা সমূহঃ

  1. পরিপূর্ণ হিসাব রাখা
  2. গাণিতিক শুদ্ধতা যাচাই
  3. লাভ-লোকসান নির্ণয়
  4. পৃথক আর্থিক অবস্থা নির্ণয়
  5. ভুল ত্রুটি ও জালিয়াতি উদঘাটন ও প্রতিরোধ
  6. সঠিক আয়কর ও ভ্যাট নির্ধারণ
  7. তথ্যের যোগান

হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের নিয়মাবলীঃ

হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে।

ক) সনাতন পদ্ধতি (Traditional Method)
খ) আধুনিক বা সমীকরণ পদ্ধতি (Modern or Equation Method)

ক) ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের সনাতন পদ্ধতিঃ

সনাতন পদ্ধতিতে হিসাব কে সরাসরি তিন ভাবে ভাগ করা যায়, যথা:

  1. ব্যক্তিবাচক হিসাব
    1. ব্যক্তি
    2. প্রতিষ্ঠান
    3. বকেয়া/অগ্রিম আয়/ব্যয়
  2. সম্পত্তিবাচক হিসাব
  3. নামিক হিসাব
    1. আয়
    2. ব্যয়

নিম্নে সনাতন পদ্ধতিতে হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের নিয়মাবলী সংক্ষিপ্ত ভাবে দেখানো হলোঃ

1ব্যক্তিবাচক হিসাবঃমূল্য বা সুবিধা গ্রহন কারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানডেবিট
মূল্য বা সুবিধা প্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানক্রেডিট
2সম্পত্তিবাচক হিসাবঃব্যবসায়ের কোন সম্পত্তির আগমন ঘটলেডেবিট
ব্যবসায় হতে কোন সম্পত্তি চলে গেলে ক্রেডিট
3নামিক হিসাবঃব্যবসায়ের যাবতীয় খরচ/ ক্ষতিডেবিট
ব্যবসায়ের যাবতীয় আয় বা লাভ ক্রেডিট

খ. ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ৈর আধুনিক পদ্ধতিঃ

আধুনিক পদ্ধতিতে হিসাবকে পাঁচ ভাবে ভাগ করা যায়, যথা:

  1. সম্পদ হিসাব
  2. দায় হিসাব
  3. আয় হিসাব
  4. ব্যয় হিসাব
  5. মালিকানাস্বত্ব হিসাব
  6. উত্তোলন

ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয়ের আধুনিক বা সমীকরণ পদ্ধতিঃ

১. সম্পদ হিসাবঃ সম্পদ সাধারণত ডেবিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • সম্পদ বৃদ্ধি পেলে ডেবিট
  • সম্পদ হ্রাস পেলে ক্রেডিট

২. দায় হিসাবঃ দায় সাধারণত ক্রেডিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • দায় হ্রাস পেলে ডেবিট
  • দায় বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট

৩. স্বত্বাধিকার হিসাবঃ স্বত্বাধিকার সাধারণত ক্রেডিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • স্বত্বাধিকার হ্রাস পেলে ডেবিট
  • স্বত্বাধিকার বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট

৪. আয় হিসাবঃ আয় সাধারণত ক্রেডিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • আয় হ্রাস পেলে ডেবিট
  • আয় বৃদ্ধি পেলে ক্রেডিট

৫. ব্যয় হিসাবঃ স্যয় সাধারণত ডেবিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • ব্যয় বৃদ্ধি পেলে ডেবিট
  • ব্যয় হ্রাস পেলে ক্রেডিট

৬. উত্তোলন হিসাবঃ উত্তোলেন সাধারণত ডেবিট ব্যালেন্স নির্দেশ করে-

  • উত্তোলন বৃদ্ধি পেলে ডেবিট
  • উত্তোলন হ্রাস পেলে ক্রেডিট
দু’তরফা দাখিলা

Leave a Comment